THE B NEWS 24

রাত ১২:৫৮ - শুক্রবার - ১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ২৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
রাত ১২:৫৮ - শুক্রবার - ১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ২৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
ধর্ম

সূরা কাহাফের গুরুত্ব ও ফজিলত

ইসলামিক ডেস্ক: জুমার দিন দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে গণ্য করা হয়। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত নবীজি (সা.) বলেছেন, পৃথিবীর যতদিন সূর্য উদিত হবে তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো শুক্রবার। এ দিনে আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়েছে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে। এ দিনেই তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছিল। সর্বশেষ কেয়ামত সংঘটিত হবে শুক্রবার দিনে। (মুসলিম ৮৫৪)।

জুমার দিনের মধ্যে একটি আমল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তা হচ্ছে জুমার দিনে ‘সূরা কাহাফ’ তেলাওয়াত করা। পবিত্র কোরআনের ১৫তম পারার ১৮তম সূরা এটি। যদি কেউ সম্পূর্ণ সূরাটি তেলাওয়াত করতে না পারেন তবে সে যেন এ সূরার প্রথম এবং শেষ ১০ আয়াত তেলাওয়াত করেন।

কোরআনের কোনো অংশ মুখস্থ করলে ইমান বৃদ্ধি হয়। সুরা আল কাহাফে কয়েকটি গল্প রয়েছে যেগুলি দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগের জন্য বাস্তব পাঠ শেখায় এবং কোরআনের সঙ্গে দৃঢ় সংযোগ গড়ে তুলতে সাহায্য করে। যেমন, ‘পৃথিবীর ওপর যা কিছু আছে আমি সেগুলোকে তার শোভা করেছি মানুষকে, এই করার জন্য যে ওদের মধ্যে কে কর্মে ভালো।’ (সুরা কাহাফ, ৭)

সূরা কাহাফে চারটি ঘটনা, চারটি বক্তব্য ও উপদেশ রয়েছে। সূরার ১ থেকে ৮ আয়াতে রয়েছে বক্তব্য। ৯ থেকে ২৬ আয়াতে আছে আসহাবে কাহাফের ঘটনা।

হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে মুক্তি পাবে।’ (মুসলিম শরিফ) রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের সূরা কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ করতে বলেছেন।

সূরা কাহাফের প্রথম দশ আয়াতে ইসলামের মৌলিক কয়েকটি বিষয়ে বলা হয়েছে। ‘আর তাদের সতর্ক করার জন্য যারা বলে যে, আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন, এ বিষয়ে তাদের কোনো জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও ছিল না। উদ্ভট কথাই তাদের মুখ থেকে বের হয়, তারা কেবল মিথ্যাই বলে।’ (সূরা কাহাফ ৪-৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর ওপর ওহি অবতীর্ণ হওয়ার আলোচনা এসেছে, ‘প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি তার দাসের প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন ও এর মধ্যে তিনি কোনো অসংগতি রাখেননি।’ (সূরা কাহাফ ১)

প্রতিদানের কথা এসেছে পরের আয়াতে। তাতে ভয় ও আশা দুটি আবেগই দেখা যায়। ‘তার কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য একে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন আর বিশ্বাসীগণ যারা সৎকাজ করে, তাদেরকে সুসংবাদ দেয়ার জন্য যে তাদের জন্য বড় ভালো পুরস্কার রয়েছে।’ ‘সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।’ (সূরা কাহাফ ২-৩)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের আগেই সতর্ক করে দিয়েছেন, ‘আদমের সৃষ্টির পর থেকে বিচার দিবসের আগ পর্যন্ত দাজ্জালের চেয়ে বড় আর কোনো ফিতনা নেই।’ (মুসলিম শরিফ) এটি দাজ্জালের বিরুদ্ধে একটি ঢাল।

সূরা কাহাফ তেলাওয়াতের ফজিলত
যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা আল কাহাফ পড়বে, তার (ঈমানের) নূর এ জুমাহ হতে আগামী জুমাহ পর্যন্ত চমকাতে থাকবে। (মিশকাত ২১৭৫)।

যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ করবে তাকে দাজ্জালের অনিষ্ট হতে নিরাপদ রাখা হবে। (মুসলিম) (মিশকাত)।

যে ব্যক্তি সূরা কাহাফ পাঠ করবে, কেয়ামতের দিন তার জন্য এমন একটি নুর হবে, যা তার অবস্থানের জায়গা থেকে মক্কা পর্যন্ত আলোকিত করে দিবে। আর যে ব্যক্তি তার শেষ দশটি আয়াত পাঠ করবে, তার জীবদ্দশায় দাজ্জাল বের হলেও সে তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। (সিলসিলায়ে সহিহা ২৬৫১)।

যে ব্যক্তি জুমার রাতে সূরা কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য স্বীয় অবস্থানের জায়গা থেকে পবিত্র মক্কা পর্যন্ত একটি নূর হবে। (সহিহ তারগিব ওয়াত্ তারহিব ৭৩৬)।

জুমার দিনে সূরা কাহফ পাঠ করলে কেয়ামত দিবসে তার পায়ের নীচ থেকে আকাশের মেঘমালা পর্যন্ত নুর আলোকিত হবে এবং দুই জুমার মধ্যবর্তী গুনাহ মাফ হবে। (আত তারগিব ওয়াত তারহিব ১/২৯৮)

জনৈক ব্যক্তি সূরা কাহাফ পড়ছিলেন। তখন লোকটি তাকিয়ে দেখতে পেলেন একখণ্ড মেঘ তাকে পরিবেষ্টন করে নিয়েছে। বারা ইবনু আজিব বর্ণনা করেছেন যে, লোকটি বিষয়টি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালামের কাছে বললেন। তখন তিনি তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘হে অমুক তুমি সূরাটি পড়তে থাক। কারণ এটি ছিল আল্লাহর রহমত বা প্রশান্তি যা কোরআন তেলাওয়াতের কারণে বা কোরআন তেলাওয়াতের জন্য অবতীর্ণ হয়েছিল। (মুসলিম ১৭৪২)

বৃহস্পতিবার দিন শেষে সূর্য ডোবার পর থেকে শুক্রবার সূর্য ডোবা পর্যন্ত যে কোনো সময় সূরা কাহাফ পাঠ করলে তা জুমার দিনে পড়া হয়েছে বলে গণ্য হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *